ফরহাদুজ্জামান নাটোর প্রতিনিধি-
বিএনপির রাজনীতি করার পাশাপাশি জুলাই বিপ্লবে অংশগ্রহন করেও নাটোরের সিংড়া উপজেলার বাঁশবাড়িয়া এলাকার এনায়েত করিম রাঙ্গাকে শেখ হাসিনার সাথে ৩টি হত্যা মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছে। জমি সংক্রান্ত বিরোধে রাঙ্গার ভাতিজা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফায়সাল আহম্মেদ এই মামলা গুলোতে অভিযুক্ত করেছেন বলে দাবি করেছেন রাঙ্গার স্ত্রী উম্মে সালমা পাপিয়া।সোমবার দুপুরে নাটোর শহরের আলাইপুরে একটি রেষ্টুরেষ্টে সংবাদ সম্মেলনে উম্মে সালমা পাপিয়া বলেন, তার স্বামী রাঙ্গা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়া পরিষদের সাবেক আহবায়ক।রাঙ্গার বৈষম্য বিরোধী আন্দোলে অংশ নেয়া ভিডিও ও ওই সময়ে দেওয়া ফেসবুক স্ট্যাটাস দেখিয়ে তিনি বলেন, বিএনপির রাজনীতি করার কারণে আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন। তিনি নিজেও আন্দোলনে স্বামীর সাথে অংশ গ্রহণ করেছেন। কিন্তু রাঙ্গার ভাই আবু জাহেদের সাথে জমি সংক্রান্ত বিরোধ রয়েছে। এই বিরোধে আবু জাহেদের ছেলে ঢাবি শিক্ষার্থী ফায়সাল আহম্মেদ চক্রান্ত করে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে ছাত্র জনতার ৩টি হত্যা মামলায় অভিযুক্ত করেন। এই মামলায় গত ২৮ ডিসেম্বর রাঙ্গাকে তার গ্রামের বাড়ি সিংড়া উপজেলার বাঁশবাড়িয়া গ্রাম থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। কোন অপরাধ না করেইি তিনি মিথ্যা হত্যা মামলায় কাারাগারে রয়েছেন। উম্মে সালমা পাপিয়া অভিযোগ করেন, ফায়সাল আহম্মেদ ছাত্রলীগের রাজনীতি ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলকের সহযোগী ছিলেন। গত নির্বাচনের আগে পলককে নিয়ে এই ছাত্রলীগ নেতা তিনটি ডকুমেন্টরী তৈরী করেও প্রচার করেছেন। আওয়ামী লীগ আমলে দাপট দেখানো ছাত্রলীগ নেতা ফয়সাল এই পরিবর্তিত সময়ে এসেও পরিবারের ও আশেপাশের মানুষকে সমন্বয়ক সেজে বিভিন্ন মামলায় আসামী বানিয়ে হয়রানী করছেন। উম্মে সালমা পাপিয়া বলেন, ১৯৯৬সাল থেকে ছাত্রলীগ নেতা ফয়সাল আহমেদের বাবা-চাচাদের মধ্যে জমিজমা নিয়ে বিরোধ শুরু হয়।২০২৩সালের ১৮আগস্ট বিরোধের জেরে ছাত্রলীগ নেতা ফয়সালের বাবা তার সৎ ভাই তৈয়ব আলীকে প্রকাশ্যে গুলি করেন। এ ঘটনায় হত্যা চেষ্টার মামলায় তার (ছাত্রলীগ নেতার) বাবা গ্রেফতার হয়ে ২১দিন জেলখাটার পর তৎকালীন প্রতিমন্ত্রী পলকের সহযোগীতায় ছাড়া পান। এই ঘটনার সময় রাঙ্গা নির্যাতিত তৈয়ব আলীর পক্ষে থাকায় এখন তাকে ভাতিজা ফয়সাল শায়েস্তা করার জন্য একের পর হত্যা মামলায় আসামী করাচ্ছেন। দেশ নতুন করে ছাত্র জনতার অভুথ্ধসঢ়;থানের পরে ছাত্র সম্বনয়ক পরিচয় দিয়ে তাদের ঢাকার বাড়িতে হুমকি দেয়। এছাড়া ফোনেও তাদের শেখ হাসিনার সাথে তার স্বামীকে হত্যাা মামলার হুমকি দেয়। পাশপাশি ফায়সাল আহম্মেদের পিতা আবু জাহেদ আওয়ামী লীগে নেতা। তাই তার ইন্ধনে এই মামলাগুলোতে অভিযুক্ত করা হয় বলে দাবি করেন পাপিয়া। এই ঘটনার সঠিক তদেন্তর দাবি করেন তিনি।তিনি বলেন কোন মামলার তদন্ত ছাড়াা কাউকে গ্রেফতার করা হবেবনা বলে সরকারের ঘোষণা থাকলেও এক্ষেত্রে তা মানা হয়নি। রাঙ্গার চাচাতো ভাই আব্দুল আজিজ বলেন, জমি সংক্রান্ত বিরোধে রাঙ্গার পক্ষ নেয়ায় তাকে হত্যা মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছে। তিনি কোনদিনই ঢাকায় যাননি। অথচ ঢাকার সূত্রাপুরে ১৯ জুলাই ছাত্র আন্দোলনে নিহত সাগর হত্যা মামলায় তাকে ৫১ নম্বর অভিযুক্ত করা হয়েছে। তিনিও এই ঘটনার জন্য ফায়সাল আহমেদকে অভিযুক্ত করেন। সিংড়া উপজেলা বিএনপির আহবায়ক অধ্যক্ষ আনোয়ারুল ইসলাম আনু বলেছেন, এনায়েত করিম রাঙ্গা সারাজীবন বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। ঢাকায় তিনি একটি সিকিউরিটি ফার্ম খুলে বিভিন্ন অফিস ও প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তী কর্মী সরবরাহ করেন। এলাকার অনেক মানুষকে ঢাকায় নিয়ে চাকুরীও দিয়েছেন। রাঙ্গাকে মিথ্যা অভিযোগে ষড়যন্ত্র করে ফাঁসানো হয়েছে বলে তিনি দাবী করেন। তবে ফায়সাল আহমেদ তার বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তিনি ছাত্রলীগের কোন পদ পদবিতে ছিলেন না। হলে থাকার জন্য ছাত্রলীগের রাজনীতির প্র্যাকটিস করা দরকার ততোটুকু সীমাবদ্ধ ছিলেন। দেশের প্রয়োজনে তিনি ছাত্র আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন। দেশের জন্য তিনি সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন। ১৭ জুলাই সূর্যসেনা হল থেকে তিনিই ছাত্রলীগ মুক্ত করেছেন বলে জানান তিনি। তার চাচার মামলার সম্পৃক্তরার অভিযোগ অস্বীকার করে ফায়সাল আহম্মেদ বলেন, তিনি এই ঘটনার সাথে জড়িত না। তার চাচার সিকিউরিটি এ্ধসেঢ়;জন্সির ব্যাবসা রয়েছে । তার কর্মীদের অর্থ আত্মাসৎ সহ নানা অভিযোগ রয়েছে। তার শত্রু অনেক রয়েছে। পারিবারিক শত্রুতার কারনে কেনো তাকে অভিযুক্ত করা হচ্ছে তার কারন খুজে পাচ্ছেন না। ফায়সাল উল্টো অভিযোগ করেন, তিনি সিংড়ায় গেলে তার পা কেটে নেয়ার হুমকি দেয়া হয়েছে।
Leave a Reply