উজ্জ্বল কুমার নওগাঁ প্রতিনিধি :
নওগাঁয় আসন্ন ঈদুল আযহাকে ঘিরে জেলার মান্দা উপজেলায় দুটি খামারে প্রস্তুত করা হয়েছে বিশালাকৃতির দুটি ষাঁড়। ষাঁড় দুটির নাম রাখা হয়েছে টাইগার বিষু ও নবাব। এদের ঘিরে খামার দুটিতে চলেছে ঈদের আগাম উৎসব শুরু হয়েছে । এরই মধ্যে টাইগার বিষুকে বিক্রি করা হয়েছে ৭ লাখ টাকায়। ক্রস ফ্রিজিয়ান জাতের ৩০ মণ ওজনের টাইগার বিষুকে লালন পালন করেছেন উপজেলার ছোটবেলালদহ গ্রামের খামারি আবু ইউসুফ হেলাল ও ৩৫ মণ ওজনের নবাবকে বড় করে তোলা হয়েছে এনায়েতপুর মঞ্জিলতলা গ্রামের আফজাল হোসেনের খামারে। ষাঁড় দুটি শুধু গ্রামের নয়, আশপাশের অনেক এলাকার মানুষের কৌতুহলের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। মাত্র সাড়ে তিন বছর বয়সেই এদের এমন ওজন হয়েছে। খামার মালিকেরা বলছেন, আদর-যত্ন আর সুষম খাদ্যেই ষাঁড় দুটির এই আকৃতি পাওয়ার মূল্য রহস্য। এনায়েতপুর মঞ্জিলতলা গ্রামের খামারি আফজাল হোসেন বলেন, নবাবকে প্রতিদিন তিনবেলা গোসল করানো হয়। পরিচর্যায় নেওয়া হয় সর্বোচ্চ সতর্কতা। তার খাবারের তালিকায় প্রতিদিন থাকে ৫ কেজি ময়দা ও ভুসি, ৩ কেজি দানাগুড়, পাশাপাশি গম, কালাই, বিভিন্ন দানাশস্য ও অন্যান্য পুষ্টিকর উপাদান। খামারি আফজাল হোসেন আরও বলেন, ‘শুধু নবাব নয়, আমার খামারে রয়েছে আরও তিনটি বিশাল ষাঁড়। এদের নাম দেওয়া হয়েছে সাদা মানিক, কালো মানিক এবং বাদশা। প্রতিটি ষাঁড়ই আকৃতির দিক থেকে চমকপ্রদ এবং একইভাবে পরিচর্যা করা হয়।’ আরেক খামারি আবু ইউসুফ হেলাল বলেন, সখের বশে ফ্রিজিয়ান জাতের গরুটি লালন পালন করেছি। শুরুতেই এ গরুটি নিয়ে আমার চরম কৌতুহল ছিল। মাত্র তিন বছরেই এর ওজন হয়েছে ৩০ মণ। প্রতিদিন অন্তত ৩০ কেজি সুষম খাবার খাওয়াতে হয়েছে।’ এই বিশাল ষাঁড় দুটির খ্যাতি এরই মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে বিভিন্ন এলাকায়। ঈদুল আজহা সামনে রেখে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ খামার দুটিতে ভিড় করছেন তাদের এক নজর দেখতে। অনেকেই ছবি তুলে সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করছেন, বাড়াচ্ছেন ষাঁড়গুলোর জনপ্রিয়তা। খামার দুটিতে এখন যেন এক উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। খামারিরা বলছেন, এ ধরনের বড় ষাঁড় কোরবানির ঈদের বাজারে ভালো দামে বিক্রির সম্ভাবনা থাকে। শুধু লাভ নয়, পশুদের প্রতি ভালোবাসা ও যত্নই তাদের এই খাতে এগিয়ে যেতে অনুপ্রাণিত করেছে। এ প্রসঙ্গে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মোহাম্মদ নুরুজ্জামান শিপন বলেন, কুরবানির ঈদকে সামনে রেখে খামার দুটিতে ঝাঁড় হৃষ্ট-পুষ্ট করা হয়েছে। উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের সার্বক্ষনিক তদারকি ছিল। খামার দুটি এখন শুধুই একটি পশু খামার নয়, বরং এটি হয়ে উঠেছে পশুপ্রেম, পরিশ্রম ও সফলতার এক অনন্য উদাহরণ।
Leave a Reply