প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে রাজধানী ঢাকা ছাড়ছে ঘরমুখো মানুষ। দেশের দক্ষিণাঞ্চলের যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল।ফলে বৃষ্টি উপেক্ষা করে সদরঘাটে ছিল যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড়।বৃহস্পতিবার (৫ জুন) দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সদরঘাট ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। যাত্রীর চাপে টার্মিনালের পন্টুনে তিল ধারণের জায়গা ছিল না।কোনো নিয়ম মেনেই লঞ্চ ছাড়া হচ্ছে না-যাত্রী ভরে গেলেই লঞ্চ ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। তবে কোনো কোনো লঞ্চে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে। এদিকে অতিরিক্ত যাত্রীদের চাপ সামলাতে ও নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছে দিতে অতিরিক্ত ৮০টি লঞ্চ সংযোজন করা হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, আগামীকাল থেকে যাত্রীদের চাপ আরও বাড়বে।প্রসঙ্গত, চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী শনিবার (০৭ জুন) দেশে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত হবে। প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে বাস ও ট্রেনের মতো লঞ্চেও রাজধানী ছাড়ছেন নগরবাসীরা।এদিন ভিড় থাকলেও যাত্রীরা দুর্ভোগ ছাড়াই লঞ্চে উঠতে পারছেন। তবে বেশিরভাগ লঞ্চ সরকার নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে বেশি ভাড়া নিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন অনেক যাত্রী। এছাড়া সদরঘাটে আসতে গুলিস্তান, রায়সাহেব বাজার, ভিক্টোরিয়া পার্ক এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। গুলিস্তান থেকে অনেক যাত্রীকে হেঁটে সদরঘাটে আসতে হয়েছে। দুপুরের পর বৃষ্টি হওয়ায় সন্ধ্যায় এসব এলাকায় হঠাৎ যাত্রীদের চাপ বেড়ে গিয়ে এই যানজট সৃষ্টি হয়েছে। যানজট ছাড়া যাত্রীদের আর তেমন কোনো দুর্ভোগ পোহাতে হয়নি।বিআইডব্লিউটিএ’র কর্মকর্তা ও লঞ্চ সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, সকালের তুলনায় বিকেলে যাত্রীদের চাপ বেড়েছে। এ সময়ে টার্মিনালের পন্টুনে পা ফেলার জায়গা নেই।বরিশাল-বরগুনা রুটের লঞ্চ এমভি শাহরুখ-২-এর কেবিন ইনচার্জ মো. মামুন বাংলানিউজকে বলেন, আজ সকাল থেকেই যাত্রীদের অনেক চাপ। আজ কোনো সময় নির্ধারণ করা নেই। লঞ্চ ভরে গেলেই ছেড়ে দিচ্ছি। আমরা সরকার নির্ধারিত ভাড়াই নিচ্ছি। কোনো অতিরিক্ত যাত্রী নিচ্ছি না।চরফ্যাশনগামী এমভি তাসরিফ-৩ এর যাত্রী শিমুল কাজী বলেন, চার বন্ধু মিলে কেবিন নিয়েছি। চাপ অনেক, তবে ঘাটে অনেক লঞ্চ রয়েছে। কিছুটা ভাড়া বেশি নিচ্ছে, তাও ঈদ বলেই মেনে নিচ্ছি।লঞ্চটির ম্যানেজার বাংলানিউজকে জানান, সকাল-দুপুরে তেমন চাপ ছিল না। তবে সন্ধ্যার পর হঠাৎ করেই চাপ বেড়েছে। গার্মেন্টস ছুটি শুরু হওয়ায় একইসঙ্গে অনেক যাত্রী এসে পড়েছেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দেশের ৪৩টি নৌরুটে ঢাকা থেকে ছেড়েছে ৮০টি লঞ্চ, এসেছে ৯২টি। রাত পর্যন্ত আরও ৫০-৬০টি লঞ্চ ছাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। স্বাভাবিক সময়ে এসব রুটে প্রতিদিন ৮০-৮৬টি লঞ্চ চলাচল করে।ঈদযাত্রায় যাত্রীরা যেন নির্বিঘ্নে নিরাপদে যেতে পারেন সেজন্য পুলিশের পাশাপাশি র্যাব, আনসার, নৌপুলিশ ও বিএনসিসিসহ বিভিন্ন সংস্থার সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন।নৌপুলিশের সদস্যরা টহল দিচ্ছেন ডাকাতি ও চাঁদাবাজি ঠেকাতে। যাত্রাপথেও নৌপুলিশ মোতায়েন রয়েছে। একইসঙ্গে ঈদের আগে ও পরে মোট ১০ দিন ব্ল্যাকহেড ও স্পিডবোট চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।ছুটির এই দিনগুলোতে বিভিন্ন স্থানে ম্যাজিস্ট্রেট মোতায়েন থাকবেন।
Leave a Reply